''গড়ইখালী ইউনিয়ন হোক ডিজিটাল সোনার বাংলার বহুল আলোচিত অধ্যায় ''


বিশ্বের অন্যতম অরণ্য সুন্দরবনের অতি নিকটে গড়ইখালী ইউনিয়ন৷ ঐতিহ্যবাহী খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় ১০নং গড়ইখালী ইউনিয়ন অবস্থিত৷ ইউনিয়নের পূর্ব দিক দিয়ে দেশের অন্যতম প্রধান নদী শিবসা ও উত্তর দিক মিনাজ নদী অবস্থিত৷গড়ইখালী বাজারে প্রতি সোমবারে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়৷খুলনা জেলার একটি প্রসিদ্ধ বাজার৷ইউনিয়নের আয়তন ৩৬.২৬ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ২৫.৭৬০ জন, পুরুষ ১৩.২১৩ জন, মহিলা ১২.৫৪৭ জন৷ শিক্ষা ক্ষেত্রেও গড়ইখালী ইউনিয়নে রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ৷ মাদ্রাসা ৩ টি, বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬ টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬ টি, বালিকা বিদ্যালয় ৪ টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬ টি এবং শহীদ আয়ুব ও মুসা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ৷
এই ইউনিয়নের লোকজন খুবই শান্তিপ্রিয়। বিভিন্ন ধর্ম, পেশা ও সংস্কৃতির মানুষ একসংগে বাস করে। এই ইউনিয়নে অনেক কৃতি সন্তান জন্মগ্রহন করেছে যারা বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এই ইউনিয়নের লোকজন খুবই সরল। এ কথা বলা যায় যে, গড়ইখালী ইউনিয়ন বাংলাদেশের একটি আদর্শ ইউনিয়ন ও তথ্য-প্রযুক্তির একমাত্র আলোকিত পটভূমি।
পটভূমি: বাংলাদেশের বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ এর শুরু হয়েছিলো ১৮৭০ সালে চৌকিদারী পঞ্চায়েত গঠনের মধ্য দিয়ে। আজকের পরিসরে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত সরকার ব্যবস্থা হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ একদিনে বা একটি আইনে বা অধ্যাদেশ বলে গড়ে উঠেনি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের চিন্তা-চেতনা ও চেষ্টা-সাধনা। অতি প্রাচীন কাল থেকে বাংলাদেশে গ্রাম সরকার বিদ্যমান ছিল। এ প্রসঙ্গে স্যার চার্লস মেটকফ এর অভিমতটি বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য। তিনি

 বলেন, যেখানে কোন কিছুই টিকে থাকেনা, সেখানে গ্রাম্য সম্প্রদায় টিকে রয়েছে। যেখানে একটির পর একটি রাজবংশ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে আর একটির পর একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেখানে একমাত্র গ্রাম্য সম্প্রদায়গুলো টিকে ছিল। এই সম্পদায় গুলো যেন এক একটি স্বতন্ত্র প্রজাতন্ত্র আর বহু পরিবর্তনের মধ্যে এগুলোই ধারাবাহিকতার সূত্র বজায় রেখেছে। এদের মাধ্যমেই ভারতীয় উপমহাদেশের জন সাধারণ সংরক্ষণ করেছে তাদের সুখ, শান্তি, স্বাতন্ত্রতা ও স্বাধীনতা। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত আদিম বা দাস সমাজের চিত্র ও আমাদের জানা। তবে বৃটিশ শাসকরা গ্রামীণ সমাজের শাসন ব্যবস্থা নিজেদের করায়ত্ত্ব করার জন্য প্রথম চৌকিদারৗ পঞ্চায়েত করলেও ১৮৮৩ সালে নাম পরিবর্তন করে করা হয়। ইউনিয়ন কমিটি বোর্ড এবং ১৯১৯ সালে গঠন করা হয় ইউনিয়ন বোর্ড। আমরা আগে ছিলাম সোলাদানা ইউনিয়ন বোর্ডের অধীন। তবে দক্ষিণ খুলনার সুফী সাধক আলমশাহ ফকির এর পুত্র মরহুম এ.এফ. এম মহিউঈন সাহেব ও স্বর্গীয় বংক বিহারী মন্ডলের উদ্যোগে ১৯৩৮ সালে গড়ইখালী ইউনিয়ন বোর্ড গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালের অক্টোবরে পাকিস্থানের সামরিক শাসক মৌলিক গণতন্ত্র আদেশ দ্বারা স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাগুলোকে নতুনভাবে সংগঠিত করতে যেয়ে ইউনিয়ন বোর্ডের পরিবর্তে নাম দেয় ইউনিয়ন কাউন্সিল কিন্তু ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৭নং আদেশ বলে ইউনিয়ন কাউন্সিল কে ইউনিয়ন পঞ্চায়েত নাম দিলেও ১৯৭৩ সালের ২২ মার্চ রাষ্টপতির অপর একটি আদেশে ইউনিয়ন পঞ্চায়েত এর পরিবর্তে নাম দেয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদ।

ইউনিয়ন পরিষদ কোন লক্ষ্য নয়, লক্ষ্য অর্জনের উপায় মাত্র। এ ব্যবস্থার কোন সমাপ্তি নেই। অবিরাম অগ্রসরমূলক। এটি হলো আমাদের আদিম শাসন ব্যবস্থার আধুনিক সংস্করন মাত্র,তবে এটি গ্রামীন সমাজের সবচেয়ে নিকটতম সরকার এবং গ্রামীণ সমাজের উন্নয়ন ও সেবার প্রধান কেন্দ্র।